বাসাবাড়ির আবর্জনাকে বৈশিষ্ট্যভেদে
৫ ভাগে
ভাগ করা যায়। যেগুলো হলো:
(১) পচনশীল (জৈব) আবর্জনা;
(২) অপচনশীল (অজৈব) আবর্জনা;
(৩) ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য;
(৪) ধারালো বর্জ্য;
(৫) বাসাবাড়ির “মেডিকেল” বর্জ্য।
যেসব আবর্জনা সহজেই পঁচে যায় সাধারণত সেগুলোই “পচনশীল ভেজা আবর্জনা” শ্রেণিভুক্ত। জৈব উপাদানের উচ্ছিষ্ট অংশই এ শ্রেণিতে প্রধান। যেমনঃ ফলের আঁটি বা খোসা, শাক-সবজির ফেলনা অংশ, মাছের কাঁটা বা আঁশ, মাংসের হাড়, মুরগীর নাড়িভূঁড়ী, চা-পাতা, ডিমের খোসা, ফেলনা ভাত তরকারি, ফুলের গোছা, গাছের পাতা ইত্যাদি।
- ডাস্টবিনে দীর্ঘসময় ফেলে রাখলে দুর্গন্ধ ও জীবাণু উৎপন্ন হয়।
- পলিথিন বা অন্যান্য অজৈব দ্রব্যের সাথে মিশ্রিত থাকলে মাটিতে মিশে যেতে পারে না।
- মাটিতে মিশে যেতে না পারলে অনেকক্ষেত্রে পঁচে গিয়ে বিষাক্ত গ্যাস উৎপন্ন করে।
- অজৈব জিনিসের সাথে মিশিয়ে ফেলা যাবে না।
- ডাস্টবিনে দীর্ঘসময় পড়ে থাকতে দেয়া যাবে না।
- উন্মুক্তভাবে মাটিতে ফেলা যাবে না, তবে সীমিত পরিসরের ক্ষেত্রে মাটিচাপা দেয়া যাবে।
অপচনশীল অজৈব আবর্জনাগুলোকেই শুকনো আবর্জনা বলা হয়, এগুলো প্রকৃতিতে অপচনশীল।
যেমন: কাগজ, কাগজের ঠোঙা, বিভিন্ন রকম পলিথিন, পিৎজা-ফাস্টফুডের প্যাকেট, প্লাস্টিকের প্যাকেট, অন্যান্য প্লাস্টিক বস্তু, লোহার নাট-বল্টু ও ধাতব জিনিসপত্র, ফেলনা কাপড়, কাপড়ের টুকরা, শ্যাম্পু ও প্রসাধনীর বোতল বা টিউব, তেল কিংবা পানির বোতল ইত্যাদি।
- গাছের শেকড় খাদ্যসংগ্রহে বাধাপ্রাপ্ত হয়, ফলে গাছ মরে যায়।
- মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়।
- আগুনে পোড়ালে ক্ষতিকর গ্যাস নির্গত হয়ে বায়ুদূষণ ঘটে।
- জলাশয়ের পানিকে দূষিত হয় ফলে সেখানকার উদ্ভিদ বা জলজ প্রাণী জন্য বিপন্ন হয়ে যায়।
- ড্রেন বন্ধ করে জলাবদ্ধতা তৈরি করে।
- প্লাস্টিক ও পলিথিনকে জৈব আবর্জনার সাথে মিশিয়ে ফেলা যাবে না।
- খাবারের উচ্ছিষ্ট খাবারের প্যাকেটসহ না ফেলে খাবার আলাদা ও প্যাকেট আলাদা করে ফেলতে হবে।
- শ্যাম্পু-সাবানের মিনিপ্যাক বাথরুমে না ফেলে শুকনো আবর্জনার বালতিতে ফেলতে হবে।
ফেলনা ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র বা যন্ত্রাংশকে ই-বর্জ্য নামে ডাকা হয়। ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ সারাবিশ্বে এখন একটি সম্ভাবনাময়ী এবং লাভজনক শিল্প। শুধু বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২ কোটি নষ্ট মোবাইল ফোন ফেলে দেয়া হয়। এছাড়াও ফেলে দেয়া কম্পিউটার সামগ্রীসহ অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রাংশের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছেই।
যেমন: নষ্ট পেন্সিল বা মোবাইল ব্যাটারি, নষ্ট চার্জার, অ্যাডাপটার, ফেলনা তার, তারের টুকরা, নষ্ট টিভি রিমোট, ভাঙা মোবাইল, নষ্ট মেমোরি কার্ড, র্যাম, পেনড্রাইভ, নষ্ট প্লাগ, সুইচবোর্ড, থ্রিপিন, মাল্টিপ্ল্যাগ, প্রিন্টারের ফেলনা, কার্টিজ, ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস কিংবা অংশবিশেষ ইত্যাদি।
- প্রায় প্রতিটি ইলেক্ট্রনিক বর্জ্যই পুনরায় প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব।
- ইলেক্ট্রনিক বর্জ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক ও অন্যান্য ক্ষতিকারক উপাদান থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
- ডাস্টবিনের ময়লার সাথে মিশে গেলে এগুলো খুঁজে খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন।
- এই ধরণের ময়লাগুলোকে আলাদা করে শুকনো আবর্জনার বালতি/ঝুড়িতে ফেলতে হবে।
- ভেজা ময়লার সাথে ফেলে ডাস্টবিনে মিশে যেতে দেয়া যাবে না।
- রাসায়নিক দূষণরোধে ব্যাটারি ও বিশেষ যন্ত্রাংশের ক্ষেত্রে সেগুলো প্যাকেটে মুড়ে ফেলতে হবে।
- ইলেক্ট্রনিক বর্জ্য একইসাথে বিপজ্জনক এবং সম্ভাবনাময়ী; তাই এগুলোর
ব্যাপারে বিশেষ সচেতনতা তৈরি করতে হবে।
সূঁচালো বা ধারালো আবর্জনাসমূহ।
যেমন: ভাঙা কাঁচ, ফেলনা ছুরি, কাটার, ফেলনা ব্লেড, সুঁই, পেরেক, প্লাস্টিক বা স্টিলের ভাঙা রুলার, ভাঙা প্লাস্টিকের বস্তু, ভাঙা ধাতব বস্তু, ভাঙা খেলনা ইত্যাদি।
- সহজেই আবার প্রক্রিয়াজাত করে কাজে লাগানো সম্ভব।
- ডাস্টবিনের ময়লার সাথে মিশে গেলে এগুলো খুঁজে বের করা অত্যন্ত কঠিন।
- ময়লা সংগ্রহকারী এবং ভাগাড়ের শ্রমিকদের হাত-পা কেটে যায়।
- আলাদা করে শুকনো আবর্জনার বালতি/ঝুড়িতে ফেলতে হয়।
- খোলাভাবে না ফেলে যতটাসম্ভব কাগজে মুড়ে প্যাকেট করে ফেলা উচিত।
- হাত-পা কেটে যাওয়া এড়াতে সংগ্রহ করার সময় ময়লাওয়ালাকেও আলাদাভাবে জানিয়ে সতর্ক করে দিতে হবে।
হাসপাতালের বর্জ্যসমূহ এই প্রকারভুক্ত। আমাদের বাসাবাড়িতেও একই বৈশিষ্ট্যের কিছু বর্জ্য তৈরি হয়ে থাকে; যেগুলোকে বাসাবাড়ির ‘মেডিকেল বর্জ্য’ বলা চলে।
যেমন: ব্যবহৃত ব্যান্ডেজ, ব্যবহৃত তুলা, রক্তমাখা কাপড়, ব্যান্ডেজ, ব্যবহৃত ন্যাপকিন, স্যানিটারী প্যাড, ডায়পার, ফেলনা ঔষধ, ট্যাবলেট, ব্যবহৃত সিরিঞ্জ, ইনহেলার, ফেলনা স্প্রে, কীটনাশক ঔষধ, যে কোন তরল রাসায়নিক ইত্যাদি।
- পলিথিন ব্যাগে ভালো করে বন্ধ করে ফেলতে হবে।
- ব্যবহৃত সিরিঞ্জ গরম পানিতে ধুয়ে ধারালো আবর্জনা হিসেবে ফেলতে হবে।
- ট্যাবলেট, ঔষধ, কীটনাশক ইত্যাদি উন্মুক্ত অবস্থায় ফেলা যাবে না।
- কোনভাবেই আগুনে পোড়ানো বা পানিতে ফেলা যাবে না।
সঠিক বিনে (বালতিতে) সঠিক ময়লা না ফেলা হলে, তা ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আমাদের উচিত:
Garbage Disposal Behavior
Participate in our survey on garbage disposal behavior of city dwellers. This will help us propose policies and possible directions for better waste management system in our cities.